যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন | jekhane dekhibe chai uraiya dekho tai paileo paite paro omullo roton

বাংলা ২য় পত্র 

ভাব-সম্প্রসারণ


যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন | jekhane dekhibe chai uraiya dekho tai paileo paite paro omullo roton


যেখানে দেখিবে ছাই উড়াইয়া দেখ তাই

পাইলেও পাইতে পার অমূল্য রতন।


মূলভাব : পৃথিবীর কোনাে বস্তুই তুচ্ছ বলে ফেলনা নয়। যে কোনাে তুচ্ছ বস্তুর ভেতর থেকেও মহামূল্যবান বস্তুর প্রাপ্তি নিশ্চিত হতে

পারে।


সম্প্রসারিত-ভাব : ছাই নিতান্তই তুচ্ছ বস্তু । সবকিছু পুড়েই জন্ম হয় ছাইয়ের । কিন্তু এ ছাইয়ের ভেতরও বহুমূল্য বস্তু লুকিয়ে থাকতে পারে। আগুনে সবকিছু ভস্মীভূত হবার পর মূল্যবান পাথর ও ধাতব পদার্থ ছাইয়ের মধ্যে ঠিকই অবশিষ্ট থেকে যায়। ছাই উড়িয়ে সে সব মূল্যবান সম্পদ হস্তগত করা যায় । সে জন্যে সচেতন ও অনুসন্ধিৎসু ব্যক্তিরা সবকিছুর মধ্যেই অর্থপূর্ণ উপকরণ সন্ধান করেন। তবে সব সময়ই যে তুচ্ছ বস্তুর ভেতরে থেকে মূল্যবান বস্তু পাওয়া যাবে এমন নয়। কিন্তু পাওয়ার সম্ভাবনাটি উড়িয়ে দিলে আমাদের চলবে না। অনেকেরই হয়ত অজানা যে, কয়লার মাঝে মহামূল্য পদার্থের উপস্থিতি বিদ্যমান।


হীরকের উপস্থিতিও কয়লার মধ্যেই থাকে। তাই কালাে বলে কয়লাকে উপেক্ষা করলে হীরার খোঁজ পাওয়া যাবে না। আসলে বস্তুজগৎ থেকে শুরু করে মানবসম্পর্ক তথা সামাজিক জীবনের কোনাে বিষয়ই তুচ্ছ বলে উপেক্ষার যােগ্য নয় । মূল্যবান যা কিছু তা তুচ্ছাতিতুচ্ছ বিষয়ের মাঝেই লুকিয়ে থাকে। তবে মূল্যবান সামগ্রী সংগ্রহের জন্যে মানুষের প্রয়ােজন নিবিষ্ট মন, গভীর পর্যবেক্ষণ শক্তি ও অনুসন্ধিৎসা। অতি সাধারণ কিংবা অশিক্ষিত মানুষের মাঝেও মহৎ গুণ বিকশিত হয়ে উঠতে পারে। সাধারণ মানুষের সাথে সংস্রব, না রাখলে এবং তাদের সাথে একান্তভাবে মেলামেশা না করলে সাধারণের মাঝে অসাধারণের প্রকাশ লক্ষ্য করা যাবে না।


কোনাে ঝিনুক খণ্ডকে তার শক্ত খােলস দেখে কিংবা প্রকৃতিতে তুচ্ছ সৃষ্টি বলে অবজ্ঞায় এড়িয়ে গেলে সুন্দর মুক্তার সন্ধান কিছুতেই পাওয়া যাবে না। মানুষের তুচ্ছ হাসি-কান্না, আবেগ-অনুভূতি এবং আশা-আকাক্ষাকে গুরুত্ব না দিলে আমাদের জীবনে মহত্ত্বের বিকাশ ঘটবে না। জীবনের বিচিত্র রূপটিও চোখের সামনে ধরা পড়বে না। ছােটখাটো মানব আচরণ ও তুচ্ছ আবেগ-অনুভূতির প্রতি আন্তরিক দৃষ্টি না দিলে হৃদয়ের প্রকৃত স্বরূপটি কারাে কাছে উদ্ঘাটিত হবে।  দৈনন্দিন হাসি-আনন্দের মধ্যে নিজেকে সমর্পণ না করলে নিজেকে কেবল মরুসদৃশ প্রেমানুভূতিশূন্যই করা হবে ।


ছােট ছােট কথাকে আমল না দিলে জীবনে কিছু দরকারি কথাই কেবল অবশিষ্ট থাকবে। দরকারি কথার ভারে জীবনের সজীব বিকাশ ও কোমল অনুভূতি হারিয়ে যাবে। আমাদের জীবন হয়ে পড়বে আনন্দহীন, উৎসাহহীন । ছােট ছােট ছেলেমেয়েদের অকারণ আনন্দ-উল্লাসকে আমরা যদি উপেক্ষা করি তাহলে প্রকৃত আনন্দের স্বর্গসুধাটুকুর সন্ধান পাবাে না । আমাদের তাই জীবনপথে যা কিছু তুচ্ছ অনুষঙ্গ সামনে আসবে তা উপেক্ষা না করে তার ভেতর থেকে মূল্যবান বস্তু কিংবা বিষয়ের অবস্থানকে গুরুত্ব দিতে হবে।


মন্তব্য : জীবনে কোনাে কিছু তুচ্ছ বলে উপেক্ষণীয় নয়। তুচ্ছই মূল্যবানকে আপনার ভেতরে ধারণ করে থাকে। তাই মূল্যবান কিছু পেতে হলে আমাদের তুচ্ছ বস্তুকেই গুরুত্ব দিতে হবে ।


Comments

Popular posts from this blog

সকলের তরে সকলে আমরা প্রত্যেকে আমরা পরের তরে |sokoler tore sokole amra protteke amra porer tore

কীর্তিমানের মৃত্যু নেই | kirtimaner mrittu nei | kirti maner mrittu nei